বিল্ডিংয়ের মরিচা দূর করার উপায়
সারা বিশ্বে কংক্রিট (সিমেন্ট, বালু ও পাথরের মিশ্রণ) দিয়ে তৈরি স্থাপনা ব্যাপক জনপ্রিয়। ঢাকা শহরে বেশিরভাগ স্থাপনা কংক্রিট দিয়ে তৈরি হয়ে থাকে। সাহিত্যিকদের ভাষায় ঢাকা শহরকে আমরা কংক্রিটের শহর বলে থাকি। এই কংক্রিটের সাথে আমরা রড ব্যবহার করে থাকি যাকে RCC বলে। সঠিকভাবে ব্যবহার না করলে এই রডে মরিচাজনিত সমস্যার কারণে ভবনটি ক্ষতির সম্মুখীন হয়। ব্যবহৃত রড বাইরের বাতাসের সংস্পর্শে এলে বাতাসের অক্সিজেনের সাথে লোহার বিক্রিয়ায় এক ধরণের যৌগ আয়রণ অক্সাইড সৃষ্টি হয়। এই আয়রণ অক্সাইডই বাংলায় মরিচা নামে অভিহিত। অর্থাৎ কংক্রিটের মধ্যে রড কোনভাবে পানি এবং অক্সিজেনের সংস্পর্শে আসলে মরিচা হতে পারে। এই মরিচার কারণে লোহা ফুলে যায় বা আয়তনে স্ফীত হয় যার ফলে কংক্রিটে ফাটল ধরে বা ঢালাই খসে পড়ে ভবনের স্থায়িত্ব কমিয়ে দেয়।
ভবনে ব্যবহৃত রডে যেন মরিচা না লাগে সেজন্যে আমরা ভবনের প্রত্যেকটি মেম্বার যেমন কলাম, বীম, স্লাবে নূন্যতম ক্লিয়ার কভার ব্যবহার করে থাকি। ক্লিয়ার কভার হচ্ছে রডের টাই থেকে কংক্রিটের যতটুকু অংশ থাকে সেটিকে বলা হয়ে থাকে। একজন স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার যথাযথভাবে এই ক্লিয়ার কভার ড্রয়িং উল্লেখ করে দেয় যাতে মরিচা লেগে ভবনের ক্ষতি সাধিত না হয়। এরপর অবশ্যই ভালো মানের কংক্রিট ব্যবহার করতে হবে এবং ভালো মানের কংক্রিটের জন্য উন্নত সিমেন্ট ও রড ব্যবহার করতে হবে।
বিল্ডিং তৈরিতে কাজের ধাপসমুহ
ঢালাইয়ের সময় কংক্রিটে সিমেন্ট দ্বারা যে হাইড্রেশন বিক্রিয়া হয়, সেটির ফলে রডের চারপাশে একটি প্যাসিভ লেয়ার তৈরি করে যা রডকে মরিচার হাত থেকে রক্ষা করে। অন্যদিকে রড ভাল স্ট্রেন্থের হতে হবে এবং ক্রোমিয়ামের মাত্রা ঠিক করতে হবে। আবার যে এ্যাগ্রেগেট বা স্টোন চিপ্স ব্যবহার করা হবে, তা ভাল গ্রেডের কৌনিক আকৃতির হবে।
কংক্রিটে বেশি পানি ব্যবহার করা যাবে না। কারণ অতিরিক্ত পানি ক্যাপিলারি চ্যানেল তৈরি করে ক্ষতিকর উপাদানগুলোকে অতি দ্রুত কংক্রিটের ভিতর প্রবেশ করিয়ে এর শক্তিমাত্রা কমিয়ে দিতে পারে যা ভিতরের রডে মরিচা পড়তে সহায়তা করে। অন্যদিকে পানি কমিয়ে দিলে কংক্রিটের নমনীয়তাও কমে যায় যা এ্যাডমিক্সার ব্যবহার করে দূর করতে হবে।
তাপমাত্রাও মরিচা হওয়ার একটি অন্যতম কারণ। এজন্যে খুব গরম আবহাওয়ায় কংক্রিট তৈরি না করাই ভাল অথবা তাপমাত্রা কমানোর জন্যে এ্যাডমিক্সার ব্যবহার করতে হবে।
বসুন্ধরায় জমি কিনুন
এছাড়া বিভিন্ন যৌগের আক্রমণে ভবনে মরিচা দেখা যেতে পারে।
ক্লোরাইড আক্রমণঃ
সিমেন্ট, পানি, এ্যাগ্রিগেট, এ্যাডমিক্সার থেকে ক্লোরাইড আক্রমণ হতে পারে যা রডে মরিচা ধরায়। কোন সিমেন্ট, এ্যাগ্রিগেট, এ্যাডমিক্সার ব্যবহার করলে ভালো হবে তা একজন কংক্রিট বিশেষজ্ঞের কাছে জেনে নেওয়া ভালো। তবে আমরা পানির বিষয়টি তেমন গুরুত্ব দেয়না। সাইটে কাজ শুরু করার আগে কংক্রিটে ব্যবহৃত পানিতে ক্লোরাইডের মাত্রা কত তা দেখে নিতে হবে। সাধারণভাবে পানের যোগ্য যে কোন পানি ব্যবহার করা উত্তম।
ক্লোরাইড আক্রমণঃ
সিমেন্ট, পানি, এ্যাগ্রিগেট, এ্যাডমিক্সার থেকে ক্লোরাইড আক্রমণ হতে পারে যা রডে মরিচা ধরায়। কোন সিমেন্ট, এ্যাগ্রিগেট, এ্যাডমিক্সার ব্যবহার করলে ভালো হবে তা একজন কংক্রিট বিশেষজ্ঞের কাছে জেনে নেওয়া ভালো। তবে আমরা পানির বিষয়টি তেমন গুরুত্ব দেয়না। সাইটে কাজ শুরু করার আগে কংক্রিটে ব্যবহৃত পানিতে ক্লোরাইডের মাত্রা কত তা দেখে নিতে হবে। সাধারণভাবে পানের যোগ্য যে কোন পানি ব্যবহার করা উত্তম।
সালফেট আক্রমণঃ
এই সালফেট আক্রমণ সাধারণত মাটিতে হয়ে থাকে। এর ফলেও মরিচা লেগে থাকে। ফলে মাটির উপরে যে সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়ে থাকে সেই সিমেন্ট মাটির নীচে কোনভাবেই ব্যবহার করা যাবে না।