বাংলাদেশে রিয়েল এস্টেট ব্যবসার ভবিষ্যৎ
২০৩০ সালে বাংলাদেশে রিয়েল এস্টেট ব্যবসার ভবিষ্যৎ কি? ২০৩০ সালে বাংলাদেশের রিয়েল এস্টেট সেক্টর কেমন হবে??
আমরা যদি গত ৩০ বছরের বাংলাদেশে রিয়েল এস্টেট সেক্টরের কিছু তথ্য আমাদের যেনে নেওয়া দরকার।
চলুন এক নজরে দেখে নেই তথ্যগুলোঃ
- বাংলাদেশের রিয়েল এস্টেট সেক্টিরের মার্কেট সাইজ প্রায় ৬০০০ কোটি টাকা।
- গত ৫ বছর ধরে মাঝারি আকার অ্যাপার্টমেন্টগুলির (১২০০-১৪০০ sft) প্রবৃদ্ধি ৪০%।
- আবাসন ভিত্তিক কমিউনিটি লিভিং কনসেপ্ট নতুন করে যোগ হয়েছে।
আপনি যদি মনে করেন যে বাংলাদেশে রিয়েল এস্টেট নতুন, তাহলে ভুল ধারনা। এদেশে ১৯৮২ সালে চালু হয় রিয়েল এস্টেট এবং ২০০৪ সাল থেকে আমরা এই খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ দেখতে পাচ্ছি। তখন থেকে, একজনের জমিতে কোন একটি কোম্পানীর দ্বারা যৌথভাবে নির্মান এর ধারণাটি গ্রহণ করা হয়েছিল। দ্রুত নগরায়িত ঢাকার কিছু অনুন্নত এলাকা বাদে উঁচু ভবন, বাণিজ্যিক আইকনিক আর্কিটেকচার এবং উন্নয়নশীল এলাকা সম্প্রসারিত হয়েছে।
তবে ২০০৮ সালের দিকে বাংলাদেশে মোট রিয়েল এস্টেট কোম্পানির সংখ্যা ছিলো ৪০০ এবং বর্তমানে মাত্র ১৮০-২০০ টি কোম্পানি চালু আছে।
কিছু কিছু কোম্পানি যারা শহরের প্রাণকেন্দ্রে বাণিজ্যিক এবং বড় আবাসিক প্রকল্পগুলিতে বিশেষীকরণের দিকে মনোনিবেশ করে, আবার কিছু কোম্পানি আছে যারা ঢাকা শহরের চারপাশে বড় আকারের আবাসিক উন্নয়নের দিকে মনোনিবেশ করে।
আবার কিছু এলাকাভিত্তিক কোম্পানি যারা কিছু নির্দিষ্ট আবাসিক এলাকা (যেমন বসুন্ধরা, উত্তরা, মিরপুর, মোহাম্মদপুর ) নিয়ে কাজ করে।
যেমন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা নিয়ে কাজ করা কোম্পানিগুলোর মধ্যে রেড ক্রিক্স প্রোপার্টি সল্যুশন অন্যতম।
![Red Bricks Property Solution](https://redbricksbd.com/wp-content/uploads/2022/09/280565564_2849706601989754_106074324511272909_n-1-scaled.jpg)
১.৫ বিলিয়নেরও বেশি পেশাজীবী মানুষ আছে যারা রিয়েল এস্টেটে কাজ করছেন। তাদের মধ্যে ০.৪% স্থপতি, ১৭.৯% নির্মাণ প্রকৌশলী, ৭৭% শ্রমিক, ০.২% বিক্রয় পেশাদার এবং ১২% অন্যান্য কাজের সাথে জড়িত ।
গত দশ বছরে, স্থাপত্য নকশার বিকাশ ঢাকা শহরকে একটি বিস্ময়কর পর্যায়ে নিয়ে গেছে। যার কারনে ২০০৪ সাল থেকে স্থপতিদের জন্য বিশেষ চাহিদা তৈরি হয় যার কারনে প্রচুর সংখ্যক মানুষ স্থাপত্য প্রকৌশলকে তাদের কর্মজীবনের পথ হিসাবে বেছে নিয়েছিল।
বাংলাদেশের প্রধান দুটি শহর ঢাকা এবং চট্টগ্রাম যেখানে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা দ্রুত প্রসারিত হচ্ছে। যখন আমরা এই শহরগুলির দিকে মনোযোগ দিই, এটি লক্ষণীয় যে কয়েকটি ভবন যুগ যুগ ধরে নির্মাণাধীন রয়েছে। এই প্রকল্পগুলি বিশেষ করে এলাকাভিত্তিক এবং এলাকাভিত্তিক ডেভেলপার কোম্পানিগুলির দ্বারা উন্নয়নাধীন।
একসময় পুরান ঢাকা, ওয়ারী, গোপীবাগ, লালবাগ এবং গুলিস্তানকে আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের বিখ্যাত কেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করা হতো। এই এলাকাগুলো ছিল আভিজাত্যের আইকন এবং শহরের অন্যান্য অংশ ছিল অনুন্নত। নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি সময়ে, আভিজাত্য ইস্কাটন এবং গুলশানে স্থানান্তরিত হয়। ইস্কাটনে জমির অভাবের কারণে, গুলশান বিনিয়োগকারী এবং ডেভেলপার কোম্পানি উভয়ের কাছ থেকে সর্বাধিক মনোযোগ পেয়েছিল।
বর্তমানে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়ের কাছেই প্রথম পছন্দ। কারন পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা যা অন্যান্য আবাসিক এলাকা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।
বাংলাদেশে রিয়েল এস্টেট মার্কেটের প্রথম স্পাইক ২০০৬ সালের প্রথম দিকে এবং ২০০৯ পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল এবং আমরা ২০১৫ সালে দ্বিতীয় স্পাইক দেখেছি যা ২০১৮ সাল পর্যন্ত উভয় খহেত্রেই প্রায় তিন বছর ধরে চলেছিল। ২০২২ থেকে ২০২৫ এ বর্তমান প্রজন্মের স্থানান্তর, জমির অভাব, ব্যয়বহুল জীবনযাপনের একটি নতুন সুযোগ নতুন স্পাইক তৈরি করবে বলেই বিশ্বাস।
যে কোন দেশের সভ্য হতে কমপক্ষে ৭০ বছর প্রয়োজন এবং বাংলাদেশ ৫০ বছর অতিক্রম করেছে। আমরা নিশ্চিতভাবে আশা করতে পারি যে আগামী ২০ বছরের মধ্যে আমাদের দেশ অর্থনীতি, সভ্য আচরণ এবং বিলাসবহুল নগর জীবনের দিক থেকে অনেক ইউরোপীয় দেশকে ছাড়িয়ে যাবে। এর মানে হল আমরা সভ্যতার পর্যায়ে প্রবেশ করেছি।
সুতরাং আমরা বাংলাদেশে রিয়েল এস্টেট ব্যবসার ভবিষ্যৎ নিয়ে আশারবানী গাইতেই পারি।