জমি কেনার আগে যে ৬ টি বিষয় যাচাই করা জরুরি
আপনি কি ঢাকায় জমি বা প্লট কেনার কথা ভাবছেন? জমি কেনা অন্য যে কোন কিছু কেনার চেয়ে আলাদা। জমি কেনার আগে যে কোন আইনি জটিলতা এড়াতে বা নিজের কেনা জমিটি নিয়ে নিশ্চিন্ত থাকতে কিছু বিষয় আপনাকে যাচাই করতে হবে। এই বিষয়গুলো যাচাই বাছাই না করে জমি কিনলে আপনি এবং আপনার পরবর্তী প্রজন্ম অনেক ধরনের জটিলতায় পড়তে পারেন। জমি কেনার আগে যে বিষয়গুলো জানা জরুরী তা নিয়ে আজকের এই লেখা।
১। সি এস ও আর এস খতিয়ানঃ
সি এস (CS) জরিপ মূলত ১৯১০ থকে ১৯২০ সালের মধ্যে ব্রিটিশ সরকার পরিচালিত একটি ভূমি জরিপ। এর পূর্ণ রুপ ক্যাডেস্ট্রাল সার্ভে (Cadastral Survey)। এই জরিপে জমির পরিমাপ, অবস্থান, মালিকানা সহ যাবতীয় বিবরণ লিপিবদ্ধ করা হয়। অন্যদিকে, সি এস জরিপে ভুল ত্রুটি সংশোধন ও নতুন ভাবে জমি পরিমাপের মাধ্যমে যে নতুন খতিয়ান হয় তা আর এস (RS) খতিয়ান বা জরিপ হিসেবে পরিচিত। সরকারী আমিনরা সরাসরি জমি পরিমাপ করায় এই জরিপ অধিকতর নির্ভুল ও গ্রহনযোগ্য। এটি বি এস খতিয়ান নামেও পরিচিত।
২। সিটি জরিপঃ
আর এস খতিয়ানের পর বাংলাদেশ সরকারের অনুমিতিক্রমে ১৯৯৯ সালে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন জমিগুলো নতুন করে জরিপ করা হয় যা সিটি জরিপ হিসেবে পরিচিত। এটি বাংলাদেশের সর্বশেষ ও সর্বাধুনিক সিটি জরিপ। এই জরিপে জমির পরচা কম্পিউটারে লিপিবদ্ধ করা হয়। ঢাকার ভেতরে জমি কেনার ক্ষেত্রে সিটি জরিপ যাচাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
৩। মিউটেশনঃ
জমি কেনার পর ভূমি রাজস্ব বিভাগে নতুন ক্রেতার নামে রেকর্ড আপডেট করতে হবে। এই সময়ে জমি বিক্রির দলিলের কপি ভূমি রাজস্ব বিভাগে স্থানান্তর করতে হবে। এছাড়াও, সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয় রেকর্ড, উত্তরাধিকার, এবং পাওয়ার অব এটর্নি বিষয়ক বিস্তারিত তথ্য মিউটেশনের অন্তর্ভূক্ত। মিউটেশনকে বাংলায় নামজারি বলা হয়ে থাকে।
৪। স্থানীয় ভূমি অফিসে যাচাইঃ
জমি কেনার আগে অবশ্যই স্থানীয় ভূমি অফিস বা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে জমির মালিকানা, উত্তরাধিকার, রেজিস্ট্রেশন, মিউটেশন, পাওয়ার অব এটর্নি সহ সকল বিষয় যাচাই করে নেয়াটা জরুরী। জমির মালিক জীবিত না থাকলে উত্তরাধিকার সূত্রে সঠিক বন্টণ হয়েছে কিনা বা আপনার কিনতে যাওয়া অংশে অন্য কোন উত্তরাধিকারের অংশীদারিত্ব আছে কিনা তা নিশ্চিত হয়ে নিবেন।
৫। অ্যালটমেন্ট পেপারঃ
এই ডকুমেন্টসটি শুধু মাত্র বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় জমি কেনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। বসুন্ধরায় জমি কেনার পর সরকারি রেজিস্ট্রেশন-মিউটেশন ছাড়াও বসুন্ধরা কর্তৃপক্ষ আলাদা ভাবে ক্রেতার নামে নামজারি ও রেজিস্ট্রেশন করে। এটি বসুন্ধরা কর্তৃক জমির মালিকানার নিশ্চয়তা। আপনি যদি বসুন্ধরায় জমি কিনতে চান তাহলে বিক্রেতার নামে অ্যালটমেন্ট পেপার এবং বসুন্ধরার ফাইল ট্রান্সফার সঠিক ভাবে আছে কিনা তা যাচাই করে নিবেন।
৬। খাজনা রশিদঃ
জমির মালিককে প্রতি বছর জমির ধরণ, স্থান, ও পরিমাপের উপর ভিত্তি করে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ভূমি কর দিতে হয়। এটি আমাদের দেশে সাধারণত জমির খাজনা হিসেবে পরিচিত। এই খাজনা ভূমি অফিসে পরিষোধ করলে এর বিপরীতে ভূমি অফিস একটি রশিদ প্রদান করে। একে খাজনা রশিদ বা দাখিলা বলা হয়। সরকার কর্তৃক ভূমি মালিকানার নিশ্চয়তায় খাজনা রশিদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই, আপনি যে মালিকের কাছ থেকে জমি কিনছেন তার পূর্বে পরিশোধিত খাজনা রশিদ বা দাখিলা যাচাই করে নিবেন। এছাড়াও, জমি নিয়ে যে কোন ধরণের সমস্যা এড়াতে নিয়মিত খাজনা প্রদানের কোন বিকল্প নেই।
আমাদের প্রোপার্টি নিয়ে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন এখানে।
আমাদের অফিস লোকেশন দেখে নিন এখানে।